ইতালির মনফালকনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিশ্ব বিখ্যাত শহর ইতালির মনফালকনে। শহরের সাতটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলে গত শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পালন করেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস। শহীদ দিবসের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন কয়েকশ প্রবাসী শিশু-কিশোর।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তর্পক অর্পণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শনিবার বিকাল ৪টায় মনফালকনের স্থানীয় একটি হলরুমে, বাংলাদেশ সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-ইতালির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম আনিসের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মামুন আল রশিদ ও উপদেষ্টা আব্দুর রাফিক লিটনের যৌথ পরিচালনায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা স্কুল মনফালকনের সভাপতি নুরুল আমিন খন্দকার, রেনু ভূইয়া, স্কুলের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান খান সোহেল, অ্যাসোসিয়েশন নরসিংদী জেলার মনফালকনে সভাপতি জহিরুল ইসলাম ময়না, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ ভূইয়া, শরিয়তপুর জেলা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোবারক বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহাগ মুন্সি, মুন্সিগঞ্জ জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাজারুল ইসলাম মাসুম, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মোস্তাক, সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন, চাঁদপুর ইলশেবাড়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন সাধারণ সম্পাদক রুবেল প্রধান, মাদারীপুর জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী সাধারণ সম্পাদক আসাদ জামান।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, একুশের চর্চা ও লালন দুইটাই সমানভাবে করতে হবে। আগামী প্রজন্ম যেন একুশের সঠিক ইতিহাস জানতে ও বুঝতে সেই সঙ্গে নিজেকে একজন বাংলাভাষী হিসাবে গর্বিত ভাবতে হবে। সেই লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় মেধা তালিকায় স্থান করে নেয়া প্রতিযোগীদের বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া অংশগ্রহণকারী সব প্রতিযোগিদের বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ইতালির মনফালকনে শহরটিতে প্রায় দশ হাজারের অধিক প্রবাসী বাংলাদেশি ও শত শত বাংলাদেশি পরিবারের বসবাস। বিলিয়ন ইউরোর জাহাজ নির্মাণ শিল্প বাংলাদেশি কমিউনিটির রয়েছে বিশাল অংশিদারত্ব। এখানে গড়ে উঠেছে একাধিক বাংলা স্কুল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন ও শহীদদের স্মরণে পুস্পস্তপক অর্পণ করেন শত শত প্রবাসী। সেই সঙ্গে প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের শিশুদের মাঝে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরতে এবং বায়ান্নর ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা তুলে ধরতে শহরের সাতটি সামাজিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে এ বছর ছুটির দিনে পালন করেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস।
এ সময় অন্যান্য বক্তারা একুশে প্রেক্ষাপট, পটভূমি এবং তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানিরা বাঙালিদের ওপর জোরপূর্বক উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার দাবি করে যে অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল, সেসব বিষয়ে আলোচনা করেন।
তারা বলেন, পৃথিবীতে বাঙালি একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। সুতরাং এই ভাষাশহীদদের কথা মাথায় রেখে ভাষার অবমূল্যায়ন হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কানসাই ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জনি, সাধারণ সম্পাদক অজিত রাজবংশী, কানসাই স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাহফুজুল করিম, সাধারণ সম্পাদক আর এ সরকার রবিন, কানসাই যুবলীগের সভাপতি শামিমুল আজাদ রাজু, সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দিদার এবং কানসাই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার খন্দকার সুখন।