শামীম আহসানকে রোম থেকে সরাতে তদবির করলো কে?
পলাশ রহমান: মাত্র কদিন আগে রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসে ব্যাপক ভাঙ্গচুর চালায় আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপ। তাদের একাংশের অনেক রাগ ছিলো রাষ্ট্রদূত শামীম আহসানের উপর।
রাগিদের কথা হলো- তাদের কমিটি স্বয়ং শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন। এর পরেও অপর গ্রুপকে দূতাবাসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো মানে প্রধানমন্ত্রীকে অমান্য করা।
রাগিরা তাদের এই ঘেটু আবদার প্রবাসী সাংবাদিকদেরও জানিয়েছেন। ধমকের সুরে বলেছেন, পিএম এর অনুমোদিত কমিটি বাদে অন্য কোনো কমিটির খবর সাংবাদিকরা লিখতে পারবে না!
শামীম আহসান রোমে রাষ্ট্রদূত হয়ে এসেছেন বেশি দিন হয়নি। তার আগের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, ‘ঢিল মারি তোর টিনের চালে’র গীতিকার একজন আব্দুস সোবাহান শিকদার। তার আমলে রোমের বাংলাদেশ দূতাবাস নাকী দালালদের খোয়াড়ে পরিণত হয়েছিলো। হাজার হাজার প্রবাসীর পাসপোর্ট আটকে ছিলো নবায়নের ফেরিঘাটে। মিঃ আহসান এসে অনেকাংশে তা নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
অনেকে বলাবলি করছে, শামীম আহসানের দালাল নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প পছন্দ করেনি রোম আওয়ামীলীগের অনেকে। অন্যদিকে দুই কমিটির ধাক্কা-ধাক্কি তো আছেই। দূতাবাসের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া, না দেয়া নিয়ে তাদের বেশ খানিকটা রাগ আছে রাষ্ট্রদূতের উপর। তারা মিঃ আহসানকে রোম থেকে সরাতে তদবির করেছেন। তাদের সর্ষে পোড়ানোর প্রভাবে শেখ হাসিনা মিঃ আহসানকে মালেশিয়ায় রপ্তানি করেছেন।
মানুষের বলাবলি সত্যি কীনা জানি না, তবে শামীম আহসান পেশাদার কূটনীতিক। এর আগেও তিনি রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসে কাজ করেছেন ইকনোমিক কাউন্সিলরের চেয়ারে। কাজের ক্ষেত্রে সমালোচনার চেয়ে তার সাফল্যই বেশি। সুতরাং মালেশিয়ায় তাকে রপ্তানি করা খারাপ কিছু হয়নি। সেখানে আমাদের অনেক প্রবাসী বসবাস করেন। প্রায়ই সংবাদে দেখি তারা দূতাবাস সংশ্লিষ্ট নানা রকমের জটিলতায় থাকেন। মিঃ আহসান দক্ষতার সাথে তাদের মসিবত লাঘব করতে পারবেন বলে আমার ধারনা।
আচানক ইতালি, পর্তুগাল, মালয়েশিয়াসহ ৫ দেশের রাষ্ট্রদূত পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশের সরকার। বিশেষ করে রোমের রাষ্ট্রদূত পরিবর্তনের খবরে সেই পুরনো দালালরা নাকী খোশ মেজাজে আছেন। দেখা যাক নতুন রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম কি করেন। কতোটা প্রবাসী বান্ধব রাষ্ট্রদূত হন।
আশার বিষয় হলো- তিনি অভিজ্ঞ মানুষ। এর আগে মিসরে রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
পলাশ রহমান: অভিবাসী সাংবাদিক
ভেনিস, ইতালি