সু‌মেরীয় সভ‌্যতা


এম,এ হক

প্রাচীন সুমেরীয়রা বা “কালো মাথাওয়ালারা” বাস করত বর্তমান ইরাকের দক্ষিণ অংশে। সুমেরের কেন্দ্রস্থল ইউফ্রেটিস এবং টাইগ্রিস নদীর মাঝখানে অবস্থিত, যাকে গ্রীকরা পরে মেসোপটেমিয়া বলে আখ‌্যা‌য়িত ক‌রে। সু‌মেরীয়রা এই অঞ্চলটিকে খুবই দক্ষতার সাথে পা‌নি সেচের মাধ‌্যমে উর্বর ক‌রে তু‌লে‌ছিল এবং প্রত্নতাত্ত্বিকরা সুমেরীয়দের শনাক্ত করে‌ছিল সে সময়ের বড় শহরের ধ্বংসাব‌শেষ দে‌খে।

সুমেরীয়রা বৈশিষ্ট্যগতভাবে ছিল উদ্ভাবক প্রকৃ‌তির এবং সম্ভবত তারাই ছিল লেখার প্রথম উদ্ভাবক । ৩০০০ বি,সি,ই এর আগে সুমেরীয়রা সাধারণ ছবি ব্যবহার করে তাদের ভাষা ন‌থিভুক্ত করত। তারা মাটির ট্যাবলেটে লিখত, যা আমাদের কাছে কিউনিফর্ম নামে পরিচিত।

সুমেরীয়রা সময় নির্ধারণের কৌশল আবিষ্কার করেছিল যা আমরা এখনও ব্যবহার করছি। কেউ কৌতূহলী হ‌য়ে ভাব‌তে পারে কেন আমরা ঘন্টাকে ৬০ মিনিটে এবং দিনকে ২৪ ঘন্টায় ভাগ করি, কেন ১০ বা ১২’র গুণিতক নয়? খুব সহজভাবে বললে, উত্তরটি হল,সময়ের উদ্ভাবকরা দশমিক (বেস-১০) বা ডুওডেসিমেল (বেস-১২) সিস্টেমে কাজ করেননি বরং সেক্সাজেসিমাল (বেস-৬০) সিস্টেমে কাজ করছি‌লেন। প্রাচীন সুমেরীয় উদ্ভাবকদের ম‌ধ্যে যারা প্রথম স্বর্গের গতিবিধিকে গণনাযোগ্য ব্যবধানে ভাগ করেছিলেন, ৬০ ছিল তা‌দের জন‌্য নিখুঁত এক‌টি সংখ্যা। ৬০ সংখ্যাটিকে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ১০, ১২, ১৫, ২০ এবং ৩০ দি‌য়ে সমান ভা‌বে ভাগ করা যায়। তাছাড়াও প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন যে এক‌টি বছরে ৩৬০ দিন ছিল, এমন একটি সংখ্যা যা ৬০ দি‌য়ে ৬ কে গুণ কর‌লে খুব সুন্দরভাবে ফিট করে। সুমেরীয় সাম্রাজ্য স্থায়ী হয়নি। যাইহোক, দীর্ঘ ৫০০০ বছরেরও বেশী সময় ধরে বিশ্ব তাদের এই সময় নির্ধার‌ণের এই পদ্ধ‌তি অনুসরণ ক‌রে চ‌লে‌ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *