প্রিয়াংকা একাই ঠেকিয়েছেন ১১৫টি বাল্য বিয়ে


প্রিয়াংকা হালদার

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাল্যবিবাহ কোনো অংশেই ভাইরাসের চেয়ে কম নয়। এর বিরুদ্ধে অনেক সচেতনতার পরেও উল্লেখযোগ্য হারে কমছে না। তবু থেমে নেই সুনাগরিকের প্রচেষ্টা। তাদেরই একজন প্রিয়াংকা হালদার। ২০১৩ সালে শুরু করেন বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অলিখিত যুদ্ধ। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ করেছেন ১১৫টি বাল্যবিবাহ।

javascript:false

বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রিয়াংকার  যাত্রাটা এতোটাও সহজ ছিল না। ২০১৩ সালে যখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন, তখন প্রথম জানতে পারেন বাল্যবিয়ে সম্পর্কে। বাবার সহায়তায় ঠেকিয়ে দেন এক সহপাঠীর বিয়ে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাননি। মেহেরপুর জেলার মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে থাকাকালীন সহপাঠী থেকে শুরু করে সিনিয়র আপুদের বাল্যবিবাহও ঠেকিয়ে দেন প্রিয়াংকা। একটা সময় ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায়— মেহেরপুরে যেখানে বাল্যবিবাহ, সেখানেই প্রিয়াংকা। এমনও হয়েছে, মেয়েপক্ষের বাড়িতে বাধা দিতে যাওয়ায় তাকে উল্টো বেঁধে রাখা হয়েছিল!

তিনি ২০১৪ সালে ন্যশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সের সাথে শুরু শিশু সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত ছিলেন কাজ করতেন শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের উন্নয়নে এবং পরবর্তীতে ২০১৬ সালে স্বর্ণকিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন থেকে পান স্বর্ণকিশোরীর খেতাব। এতদিন ধরে চলতে থাকা একা লড়াইয়ে পাশে পেতে শুরু করে সচেতন নাগরিক থেকে শুরু করে প্রশাসনকে। এগিয়ে যান নতুনভাবে। বাড়ান নিজের কাজের পরিধি। ফলশ্রুতিতে ২০২২ সালে পান ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২।

নিজের কাজ ও স্বপ্ন নিয়ে এ তরুণী বলেন, ‘এখন চাইলেও অনেক কিছু করতে পারি না, বাধাগ্রস্থ হই। তবে আমি থামব না। মানুষের জন্য কাজ করে যাব। ইচ্ছে আছে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হওয়ার মাধ্যমে একদিন জেলা প্রশাসক হওয়ার। তাহলে কাজ করা অনেক সহজ হবে।’

প্রিয়াংকা হালদার বর্তমানে যুক্ত আছেন সামাজিক সংগঠন রুটস বাংলাদেশের ইয়ূথ মোবাইলেজেশন কো-অর্ডিনেটর হিসেবে। কাজ করছেন দক্ষিণাঞ্চলের কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যের পাশাপাশি সেখানকার সকল মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবনযাত্রা ও জলবায়ু উন্নয়নে। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছেন ইউএস অ্যাম্বাসি বাংলাদেশের সঙ্গে। বিশেষ করে সুন্দরবন, স্মরণখোলা, মংলা, কয়রার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যেখানে এখনো পিছিয়ে আছে মানুষ, যা ভাবায় প্রিয়াংকাকে। : ইত্তেফাক


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *