যুবদলের কমিটি : নয়াপল্টনে পরিচিতি সভা, গুলশানে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ


একদিকে জাতীয়তাবাদী যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির পরিচিতি সভা, অন্যদিকে কমিটিতে পদবাণিজ্য ও নিষ্ক্রিয়-অযোগ্যদের পদায়নের অভিযোগে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ রোববার রাজধানীর পৃথক স্থানে এ দুই কর্মসূচি পালিত হয়। এর মধ্য দিয়ে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে ঘিরে ক্ষোভ-অসন্তোষের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আংশিক কমিটি গঠনের ৯ মাস পর গত বুধবার যুবদলের ২৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে গত বছরের ২২ মে যুবদলের ৮ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি।

যুবদলের দাবি, সরকারবিরোধী কঠোর আন্দোলন সামনে রেখে ত্যাগী-সক্রিয় নেতাদের দিয়েই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন কমিটিতে স্থান না পাওয়া যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক নেতারা। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার নয়াপল্টন এলাকা এবং আজ গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। তাদের অভিযোগ, সক্রিয়-ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকা প্রবাসী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এবং কিছু নেতার ব্যক্তিগত কাজের লোক দিয়ে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে অন্তত অর্ধশত নেতা রয়েছেন যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। ফলে আন্দোলনে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ যুবদল পাওয়া যাবে না।’

নিষ্ক্রিয় ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পদপ্রাপ্তদের পদ বাতিল করে ত্যাগী ও সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কর্মীদের যুবদলের মূল কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান পদবঞ্চিতরা। তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদবঞ্চিতদের মধ্যে ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি তারেক উজ জামান, নুরুজ্জামান মুকিত লিংকন, জাকির হোসেন খান, জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, যুগ্মসম্পাদক মিজানুর রহমান সোহাগ, সামসুল আলম রানা, এ বি এম মহসীন বিশ্বাস, সহসাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পুসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন নেতা রয়েছেন, যারা দলের অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন।

গুলশানে বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলী আশরাফ, কামাল উদ্দিন, রিন্টু, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান দুলাল, আতিকুর রহমান আতিক, সামসুর রহমান, রফিকুল ইসলাম রতন, মাহতাব আলম, আব্দুল মমিন সবুজ, সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওমর তাহের বাবু, রিয়াদ হোসেন উজ্জ্বল, সাবেক সদস্য শাহজাহান কবির শাহীন, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি তারেক উজ জামান, আশরাফুর রহমান বাবু, শোয়েব খন্দকার, নুরুজ্জামান মুকিত লিংকন, হুমায়ুন কবির, সাজ্জাদ হোসেন উজ্জ্বল, জাকির হোসেন খান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহাগ, এ বি এম মহসিন বিশ্বাস, মাহবুব সিকদার, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরী, সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল হাসান হাওলাদার, খোরশেদ আলম, শহিদুল ইসলাম মাসুদ সরকার, সাবেক সহসম্পাদক মাজেদুল ইসলাম মাসুম, রবিউল হাসান আরিফ, জিল্লুর রহমান কাজল, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান রিয়াদ, অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান মামুন, সাবেক সদস্য নাজমুল হাই রায়হান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সম্পাদক  হাফিজুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রাশেদ খান, খন্দকার কাকন, এবাদুল হক পারভেজ প্রমুখ।

অন্যদিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন ভিক্টরি হোটেলে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ সংগঠনটির দুই শতাধিক নেতা সভায় উপস্থিত ছিলেন। যুবদলের শীর্ষ দুই নেতা তাদের বক্তব্যে হামলা-মামলা, ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে বিএনপির চলমান আন্দোলন সফলের আহ্বান জানান। উপস্থিত নেতারাও রাজপথে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আন্দোলন সফল করে সরকারের পতন ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *