বিপদ পিছু ছাড়ছে না জাপানে
এক দুর্যোগ শেষ হতে না হতেই আরেক বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে জাপান। বিপদ যেন পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই। দেশটিতে এবার নতুন বছর শুরু হয়েছে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে।
সোমবার দেশটির মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে। ধসে পড়া বাড়ির নিচে অনেকেই আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বছরের দ্বিতীয় দিনটিও কেটেছে আরেক দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার রাজধানী টোকিও হানেদা বিমান বন্দরে যাত্রী বহনকারী একটি বিমানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কাসহ ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। রয়টার্স।
দেশটিতে একই দিনে ১৫৫ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ছোট ছোট এ ভূমিকম্পগুলোর বেশিরভাগই রিখটার স্কেলে ৩ দশমিকের বেশি মাত্রার ছিল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইশিকাওয়া প্রদেশ। এ প্রদেশের ওয়াজিমা শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, ভূমিকম্পের কারণে ওয়াজিমায় প্রায় ২০০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। সুজু শহরের কর্মকর্তারা ৫০টিরও বেশি বাড়ি ধসে পড়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। ভূমিকম্পের কারণে বেশ কিছু এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ৩৪ হাজার পরিবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জাপানের কিয়োডো সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, তিনটি এলাকার ১৯টি চিকিৎসাকেন্দ্রে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। শহরের প্রধান রাস্তাগুলোও ভেঙে গেছে। যার ফলে উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টিপাত অথবা ভূমিধস উদ্ধার কাজে আরও বিঘ্ন ঘটাতে পারে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি দুর্যোগকবলিত অঞ্চলে কর্মরত আত্মরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে জাপান এয়ারলাইন্স কোম্পানির একটি বিমান এবং জাপান কোস্ট গার্ড বিমানের সংঘর্ষের একদিন পর কিশিদা সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। বলেছেন, এই দুর্ঘটনাটি দুর্যোগকবলিত মানুষকে সহায়তা সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না।