প্রবাসী নেতাদের মূল্যায়ন করা হোক!


আবদুল আজিজ সেলিম এর খোলা চিঠি

আবদুল আজিজ সেলিম

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি। ইতিহাসের সবচেয়ে দুঃসময় পার করছে। গত প্রায় ১৫ বছর যাবৎ দেশের শাসন ক্ষমতায় চেপে আছে ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদি এক গণদুশমন সরকার। তারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্র হত্যা করেছে। বিরোধী দল এবং ভিন্নমত দমন করতে কুৎসিৎ দানবে পরিণত হয়েছে। প্রিয় দেশটাকে গুম, খুন, হামলা, মামলার ভাগাড়ে পরিণত করেছে।

দেশে দ্রব্যমূল্য অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা চুরির দোকান খুলে বসেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে জঘন্যতম একটি কালো আইন করে সংবাদ মাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছে। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সম্মানি, গুণী মানুষ, কেউই রেহাই পাচ্ছে না তাদের নোংড়ামি এবং হিংস্রতা থেকে।

বিএনপির শতশত নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। গায়েবি মামলার নামে লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পর্যন্ত যেতে দেয়া হচ্ছে না। দেশনেত্রীকে ওরা তিলে তিলে হত্যার পরিকল্পনা করেছে।

তারুণ্যের অহংকার, আগামী বাংলাদেশের জনসেবক তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে ফ্যাসিবাদি সরকারের আঙ্গাবাহ আদালত। জননেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলঙ্গির থেকে শুরু করে দলের সকল ইউনিটের নেতাকর্মীদের মাথার উপর ঝুলছে লাখ লাখ মিথ্যা মামলার খড়গ।

মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ী শেখ হাসিনার সরকার নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে তারেক রহমানকে দুরে রাখতে চায়। তার বক্তব্য দেশের কোনো সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করতে দেয় না। তার পাসপোর্ট নবায়ন করে দেয় না। কারণ তারা জানে- তারেক রহমান জনতার কাছে যেতে পারলে তাদের মিথ্যা, বানোয়াট, ধাপ্পাবাজির গল্প এবং সকল ষড়যন্ত্র তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়বে। তারা তারেক রহমানকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে ভয় পায়।

ভয়ঙ্কর রং হেডেড শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ প্রিয় বাংলাদেশে নতুন মোড়কে তার বাবার জনধিকৃত বাকশাল কায়েম করেছে। দেশের প্রায় সব বিরোধী দল এই গণদুশমন সরকারের বিরুদ্ধে থেকেও ফ্যাসিবাদি হিংস্রতায় অনেক সময়ে কথা বলতে পারেনি। রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হাসিনার অবৈধ সরকার বিরোধী দল মোকাবিলা করেছে, করছে পুলিশ দিয়ে। তারা পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করেছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ানক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার হিংস্রতা থেকে প্রবাসীরাও রেহাই পায়নি। তাদের পাসপোর্ট নবায়ন না কারা, দেশের সম্পদ দখল করা, আত্মিয়দের মিথ্যা মামলা দিয়ে হযরানি করাসহ সরকার দলের বহু নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক প্রবাসীরা থেমে যায়নি। হাজারটা ঝুকি মাথায় নিয়ে বিএনপির প্রবাসী নেতাকর্মীরা গণতন্ত্র বিরোধী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, বিশ্বজনমত গড়ে তুলেছে। অন লাইন, অফ লাইনের প্রতিনিয়ত প্রতিবাদে সোচ্চার থেকেছে, আছে।

ইউরোপের যেসব দেশ থেকে ফ্যাসিবাদি হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বেশি প্রতিবাদ, প্রতিরোধ হয়েছে তার মধ্যে ইতালি অন্যতম। ইতালির প্রতিটি শহরের বিএনপির কমিটি সংগঠিত এবং শক্তিশালী। রোম থেকে শুরু করে ইউরোপের যেখানেই শেখ হাসিনা এসেছেন সেখানেই স্বাগতিক দেশের সাথে ইতালির বিএনপি শতশত নেতাকর্মী নিয়ে যোগ দিয়েছে। বিক্ষোভ, প্রতিরোধ, প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে। ইতালির জাতীয় সংসদে ইতালি বিএনপির সভাপতি রাজ্জাক ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক ঢালি নাসির ভাইর নেতৃত্বে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। সেখানে গণতন্ত্র হত্যাকারী, ভোট চোর হাসিনার জুলুম নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধারা হয়েছে। ওই কর্মসূচিতে প্রিয় নেতা মাহিদুর রহমান ভাইও উপস্থিত ছিলেন।

হাসিনার শেষ রোম সফরের সময়েও ইতালি বিএনপি ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছে। গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছে সাধারণ সম্পাদক ঢালি নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে। তিনি গোটা ইতালির জাতীয়তাবাদী শক্তিকে জড় করেছিলেন রাজধানী রোমে। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সাংগঠনিক দক্ষতায় ভোট চোরদের দল আওয়ামীলীগের ল্যাসপেনসাররা রাস্তায় দাঁড়াতেই পারেনি।

ঢালি নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বের প্রতি আমরা আস্থাশীল। আমরা তাকে যোগ্য মনে করি- আরো বড় পরিসরে নেতৃত্বের জন্যে। কেন্দ্রীয় বিএনপির নীতিনির্ধারকদের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রাখছি।

আবদুল আজিজ সেলিম

সভাপতি, ভেনিস বিএনপি, ইতালি


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *