চরমোনাই হচ্ছে এক ভন্ডামীর আস্তানা
বন্ধু মাহবুবের পোষ্ট থেকে সংকলিতঃ
আমি গভীরভাবে খেয়াল করলাম মসজিদের জামাতে যারা নিয়মিত শরীক হন, তাদের বেশীরভাগই “চরমোনাই পীরের মুরিদ”। মাথায় পাগড়িটা, গায়ে পাঞ্জাবিটা তাদেরই বেশী দেখি। মসজিদে বসে তাদের চোখেই পানি দেখি। তাদের মাহফিলগুলো লোকে পরিপূর্ণ দেখি। ভালো লাগতে শুরু করল। ফজলুল করিম পীর সাহেব আমাদের এলাকায় (৪০ কিলোর মধ্যে) যত মাহফিল করেছেন এই ভালো লাগার কারণে সবগুলোতেই যেতাম।
উনি বলতেন, “বাবারা আমার বাবাজানের ২৭ খানা কিতাফ হর হামেশায় পড়বে।”
আগ্রহ হোল। হাতে তুলে নিলাম “মাওয়ায়েজে এসহাকিয়া”, “ভেদে মারেফাত ইয়াদে খোদা”, “আশেক মাশুক”, “ইমদাদুস শুলুক”, এমনকি “তাবীজের কিতাব”টিও। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বাস্তবতাকে। চরমোনাই পীরকে চিনলাম নতুনভাবে। মনে হল এ বিষয়ে সবাইকে জানানো আমার ঈমানী দায়িত্ব।
আমি আজ আপনাদের সাথে তাদের একটি বই সম্পর্কে আলোচনা করব।
“ইমদাদুছ ছুলুক”
লেখকঃ রশিদ আহমেদ গঙ্গোহী।
মুজাহিদ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত।
বইটার শুরুতেই ফজলুল করিম পীর সাহেবের অভিমত দেয়া আছে।
পড়তে শুরু করলাম…
২৭ নম্বর পাতায় পেলাম একটা নতুন ধারণা “তাওহীদে মতলব” হচ্ছে মারেফাতের ১ম শর্ত। কি এই “তাওহীদে মতলব” পড়তে লাগলাম। পীর সাহেব লিখেছেনঃ
যেমনিভাবে ‘আল্লাহ এক’, ‘কিবলা এক’, তেমনিভাবে ‘পীরও এক ও অদ্বিতীয়’ এটা মানার নামই “তাওহীদে মতলব”।
***এর চেয়ে বড় শিরক কি এর আগে দুনিয়ায় অন্য কেউ করেছিল?
একটু ভাবলাম…
আবার পড়তে লাগলাম।
আবার লিখেছেনঃ
সাহাবীদের মাঝে নবীর মর্যাদা যেমন, আপন মুরীদদের মাঝে পীরের মর্যাদা তেমন। এখানেই থামেননি, আরেকটু অগ্রসর হয়ে লিখেছেন, “নবীর আকার শয়তান যেমনিভাবে ধারণ করতে পারে না, তেমনি পীরের আকারও ধারণ করতে পারে না।”
অবাক হয়ে ভাবছি এই কি চরমোনাই?
থামলাম না, পড়তেই থাকলাম…
পেয়ে গেলাম মারেফাতের মুল আকিদা “মুরিদ যত দুরেই থাক, পীর তার সাথে রূহানীভাবে হাজির থাকে। মুরিদ যদি কোনো ভাবে কখনও বিপদে পড়ে, তবে পীরকে হাজির-নাজির জানিয়া তার কাছে সাহায্য চাইলে, পীর তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবে।”
আরেকটু এগুলাম। কয়েক পাতা পরেই যা পড়লাম তাতে আমার শরীর রাগে কাপতে থাকল। বইটা বন্ধ করলাম। তার আগেই পড়ে ফেললাম পীরের অমীয় বানীঃ
“যে খোদাকে চোখে দেখি না, তাকে ইবাদতের যোগ্য মনে করিনা।”
(নাউজুবিল্লাহ)
জনৈক মুরিদ স্বপ্নে দেখলেন সমসাময়িক দুনিয়ার সকল অলী-আল্লাহগণ রাসুল (সাঃ) এর দরবারে হাজির হয়েছেন। রাসুল (সাঃ)কে প্রশ্ন করা হল, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বর্তমান সময়ে দুনিয়ার সবচাইতে বড় আল্লাহর অলী কে?’ রাসুল (সাঃ) উত্তরে বললেন, ‘মেপে দেখা লাগবে’। অতপর তিনি দাড়িপাল্লা আনলেন এবং তার এক পাল্লায় দুনিয়ার সকল অলী-আওলিয়াদেরকে উঠালেন, আরেক পাল্লায় চরমোনাই পীর ফজলুল করিম সাহেবকে উঠালেন। চরমোনাই পীরের পাল্লা ভারি হল।’
(ফজলুল করিম সাহেবের জীবনী ১৬২নং পাতা)
এসব পড়ার পর আমার নিজের কোনো কথা লেখার আর সাহস পাচ্ছি না… আল্লাহ্ আমাদের মাফ করুন।