ক্ষমতার দ্বন্ধ
বাল্যবন্ধু মাহবুবের পোষ্ট থেকে সংকলিতঃ
গালফ ওয়ার আসলে কি ছিল? সোভিয়েত বলয়ের শাসক সাদ্দামকে সরানোর যুদ্ধ। আরব স্প্রিং কি ছিল? রাশিয়ান বলয়ের শাসক গাদ্দাফি ও হাফেজ আল আসাদকে সরানোর যুদ্ধ। ইউক্রেনে কেন যুদ্ধ চলছে? ইউক্রেনের প্রো রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে সরিয়ে প্রো আমেরিকান পেদ্রো পোরোশেংকোর ক্ষমতা দখলের পর রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করে। তার ধারাবাহিকতায়ই শুরু হয় ইউক্রেন যুদ্ধ। যা পুরো বিশ্বের অর্থনীতিকে বেশামাল করে দিয়েছে।
সুপার পাওয়ার গুলো অন্য দেশে তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে এত মরিয়া কেন? যে কারণে তারা গালফ ওয়ার, আরব স্প্রিং ও ইউক্রেন যুদ্ধ এমনকি বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি নিতেও দ্বিধা বোধ করেনা? উত্তর একটিই। অর্থনৈতিক সুবিধা। বাজার নিয়ন্ত্রণ।
উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন অবসানের পেছনের কারণও দুই সুপার পাওয়ারের লড়াই। প্রো সোভিয়েত গান্ধীর নেতৃত্বে গড়ে উঠা কংগ্রেসকে সরিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় বসাতে পশ্চিমাদের পঞ্চাশ বছর সময় লেগেছে। ওই পঞ্চাশ বছরে ভারতকে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ তেমন কোন সহযোগিতাই করেনি। কংগ্রেস শাসনামলে শেষতক ভারতের অর্থনীতি এমন পর্যায়ে পৌছেছিল যে দেউলিয়াত্ব ঠেকাতে স্বর্ণের মজুদ মর্টগেজ রেখে ঋণ নিতে হয়েছিল। বর্তমানে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫২৮ বিলিয়ন ডলার।
পাকিস্তানে প্রো আমেরিকান নওয়াজ শরিফকে হটিয়ে প্রো রাশিয়ান ইমরান খান ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিছুদিন আগে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে বন্দী করা হয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা সহ উপমহাদেশের বেশীরভাগ দেশের চালকের আসনে এখন প্রো আমেরিকানরা। বাকি আছে কেবল বাংলাদেশ।
দুই বলয়ের শাসকদের নিজেদের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক থাকে। বিপক্ষের সাথে থাকে বৈরিতা। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা তার সাথে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। পাকিস্তান বিষয়ে তার বৈরী মনোভাব উবে গিয়েছিল।
কংগ্রেসের পর মোদি ক্ষমতায় এসে হাসিনার সহযোগী হওয়ার কথা ছিলনা। বরং বৈরিতা থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু মোদি ট্র্যাডিশন ভেঙেছেন। ভারত অর্থনৈতিক ভাবে লাভবানও হয়েছে এতে। আমেরিকাকে অন্য কোন উপায়ে বেনিফিট দিয়ে বাংলাদেশের বাজার থেকে সুবিধা না পাওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সবকিছুর একটি শেষ আছে। এখন আর হয়তো তা সম্ভব হচ্ছেনা। ভারত, চীন, রাশিয়া সবাই এখান থেকে বেনিফিট নিচ্ছে। আমেরিকা তো হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।
সিরিয়ান প্রসিডেন্ট হাফেজ আল আসাদকে রক্ষা করতে পুতিন যে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। হাসিনাকে রক্ষা করতে তিনি তেমন কোন পদক্ষেপ নেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে। যদিও তেমন কোন আভাস পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। কারণ ইনু সাহেবরা চায়নায় দৌড়াচ্ছেন। চীন আমেরিকার বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক শক্তির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার মতো শক্তি এখনও অর্জন করেছে বলে মনে হয়না।
সময়ই বলে দেবে পরবর্তীতে কি ঘটতে যাচ্ছে।