শুভ জন্মদিন লাকী ইনাম
এম, এ হক
কোথাও কেউ নেই- এর অসুস্থ মা থেকে নক্ষত্রের রাতের প্রিয় বড় আপা কিংবা বহুব্রীহির মিস এশা থেকে অয়োময়ের বড় বউ।
হুমায়ূন আহমেদের চারটি বিখ্যাত ধারাবাহিক নাটকের অন্যতম উল্লেখযোগ্য চরিত্র, যার উপস্থিতিতে নাটকগুলো পেয়েছিল ভিন্নমাত্রা। শুধু এই নাটকগুলোতেই নয়, আরো টিভি নাটক বা মঞ্চ নাটকে তিনি ছড়িয়েছেন প্রতিভার দ্যূতি, আমাদের দেশের একজন অন্যতম স্বনামধন্যা অভিনেত্রী লাকী ইনাম।
ঊনসত্তরের গনঅভ্যুত্থানের সময় সাংস্কৃতিক আন্দোলনে পরিচয় ঘটে কিংবদন্তি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডঃ ইনামুল হকের সঙ্গে, সেখান থেকেই প্রণয় থেকে পরিণয়। স্বাধীন দেশে জড়িয়ে পড়েন মঞ্চে, নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের হয়ে দেওয়ান গাজীর কিসসা সহ বহু মঞ্চ নাটকে অভিনয় করে উজ্জ্বল তারকা হয়ে আছেন।
টিভিতে প্রথম নাটক ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’, ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা নাটক হয়ে আছে ডঃ ইনামুল হকেরই লেখা “কাঙ্খিত বলয়” নাটকে প্রধান ভূমিকায় অসামান্য অভিনয় করে, আরো আছে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় “নীলপানিয়া”, বিখ্যাত নাটক “জোহরা” সহ আরো বেশ কিছু নাটক।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা প্রথম নাটক “দ্বিতীয় প্রহর”- এ ছিলেন লাকী ইনাম, এরপর এসো “নিপোবনে”, “বিবাহ” নাটকেও ছিলেন। “বহুব্রীহি”এর বেশ কয়েক পর্ব পার হবার পর মিস এশা হয়ে আসেন টিভি পর্দায়, হয়ে উঠেন গল্পের আকর্ষন। অয়োময়ের প্রতিটা নারী চরিত্রই ছিল শক্তিশালী, তার মধ্যে অন্যতম ছিল বড় বউ। যার এক কঠিন সিদ্ধান্তে শেষ পর্বে গল্পের মোড় বদলে যায়। “কোথাও কেউ নেই” এ অসুস্থ মা লুৎফার চরিত্রে মায়াময় অভিনয় করেছিলেন, তবে আমাদের প্রজন্মের কাছে বিশেষ হয়ে থাকবেন “নক্ষত্রের রাতে” এর প্রিয় বড় আপা চরিত্রের জন্য। এই নাটকে দুলাভাইয়ের সঙ্গে যে রসায়ন ছিল তা ভুলবার মত নয়, অনেক প্রানবন্ত ছিলেন। তবে আক্ষেপ এইজন্য যে, বেশ কিছু পর্ব চলার পর উনাকে আর নাটকে দেখা যায়নি। উনি নিজেই সরে এসেছিলেন নাকি সরানো হয়েছিল তা আজো রহস্য। তবে এরপরেও হুমায়ূন আহমেদের “শুক্লপক্ষ” নাটকেও অভিনয় করেছিলেন। নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় “গাঁও গেরামের কিসসা” এবং “বিয়ে” নাটকগুলোতে ছিলেন উজ্জ্বল নক্ষত্র, পরিচালনাও করেছেন বেশকিছু সংখ্যক নাটক, তার মধ্যে “আমাদের আনন্দবাড়ী” অন্যতম।
আজ একুশে পদক প্রাপ্ত এই গুণী অভিনেত্রীর জন্মদিন, এই দিনে তাঁর জন্য রইলো শুভকামনা।