প্রসঙ্গঃ ৭২-এর সংবিধান
তারিক মেহের
বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আওয়ামী লীগ থেকে ধার করে নাই কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আওয়ামী প্রোটোটাইপও বিএনপি নয়। বিপরীতে জামায়াতে ইসলাম ও ইসলামি ছাত্র শিবির কতৃক ২৪ এর চেতনা দিয়ে ৭১ কে প্রতিস্থাপিত করবার প্রয়াসও এক ধরনের অপচেষ্টা মাত্র।
যারা ভাবছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতার ময়দানে নাই এবং বিএনপি ভুল পথে আছে বিধায় নতুন দলগুলো বিএনপিকে রিপ্লেস করবে তারা মূর্খ ও বোকা ও স্বর্গে বসবাস করছেন। মনে রাখতে হবে ১৪ এর পর থেকে দু একটি ছোট খাটো দল ছাড়া আওয়ামী বিরোধিতার মঞ্চে বিএনপি ছাড়া কেউ ছিলো না। বিএনপি বা ছাত্র দল আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের ভেতর ঘাপটি মেরে রাজনীতি করে নাই। কোথাও কোথাও কোন কোন নেতা আওয়ামী লীগের সাথে বোঝাপড়া করে চলেছে কিন্তু দলত্যাগ করে নাই কিংবা ভিন্ন দলের নামে পরিচিত হয় নাই। যারা এমনটি করেছে দল তাদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বায়াত্তরের সংবিধান ছুঁড়ে ফেলার যে বয়ান সেটি দল ও গোষ্ঠীগত বয়ান মাত্র এবং নিশ্চিত ভাবে স্বার্থ তাড়িত। বায়াত্তরের সংবিধান ছুঁড়ে ফেলার বয়ানটা যখন কোন সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হবে তখন সেটিকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। আর ছুঁড়ে যদি ফেলতেই হয় তবে সেটি হতে হবে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে, কোন একটি দলের এজেন্ডা হিসেবে নয়।
আগেও বলেছি এবং আবারও বলেছি গত ষোল বছর এমন একটি শ্বাপদসংকুল পথে বিএনপি চলেছে যখন দলটির প্রধান নেত্রী ছিলেন জেলে ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন নির্বাসিত। ১/১১ এর পর থেকে দল ভাঙার প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত হয়েছে নেতা কর্মীদের নামে লক্ষ লক্ষ মামলা। আর কোন দলের ওপর এত নির্যাতন হয়নি। বলা চলে দেড় দশক ছাত্র দলকে তো এক রকম রাজনীতিই করতে হয় নাই। এই দল এখনো বহাল তবিয়তে টিকে আছে। এবং এই টিকে থাকাটাই বহু বয়ানকারীদের মাথা ব্যথার কারণ।
আজকে যারা নতুন দলের নামে বয়ান দিচ্ছে লাফালাফি করছে তাদের খানিকটা হিসেব করে চলা উচিত। অধিকতর হিসেব করা বলা উচিত। কেননা রাজনীতির পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয় অধিকতর কণ্টকাকীর্ণ। রাজনীতির সুগার ড্যাডিদের ওপর অতোটা নির্ভর করতে নেই কেননা সুগার ড্যাডিরা কখন কাকে ছুঁড়ে ফেলে তার ঠিক ঠিকানা নাই। নতুন দল এবং দল সমূহের সদস্যরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শিক্ষক। এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ লাঠিকেও মাঝে মধ্যে আরেকটি পা ভেবে বসে। লাঠি লাঠিই থাকুক।